জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করার নিয়ম ২০২৩
২০২৩ সালে এসে কেউ যদি মনে করেন জন্ম নিবন্ধন সনদের তথ্যগত ভুল রয়েছে তাহলে এটা সংশোধন করার সঠিক নিয়ম জানতে হবে। কারণ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জন্ম নিবন্ধন সনদ সংশোধন করা যাচ্ছে এবং এই সনদ সংশোধন করার জন্য নিয়ম অনলাইনের মাধ্যমে অনুসরণ করতে হচ্ছে। তাই আপনার যখন জন্ম নিবন্ধন সনদ সংশোধন করার প্রয়োজন হবে তখন কাউকে জিজ্ঞাসা না করে আমাদের ওয়েবসাইটের এই তথ্যগুলো পড়ার মাধ্যমে সরাসরি অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে চলে যাবেন।
সেখানে গিয়ে তথ্য সংশোধন করার আপনারা যাবতীয় কাজ করবেন এবং সেটা স্থানীয় সরকার বিভাগের কাছে জমা দিলে জন্ম নিবন্ধন সনদ সংশোধন হয়ে যাবে। জন্ম নিবন্ধন সনদ সংশোধনের জন্য বর্তমান সময়ে বিডিআরআইএস এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট চালু করা হয়েছে। তাই কারো তথ্য সংশোধন করার জন্য সেখানেই প্রবেশ করতে হবে এবং নির্দিষ্ট পেজে ভিজিট করে সেখানে গিয়ে তথ্য প্রদান করার মাধ্যমে কোন কোন তথ্যগুলো ভুললিপিবদ্ধ করা হয়েছিল তা তুলে দিতে হবে। সেই সাথে আরো কিছু নিয়ম অনুসরণ করার মাধ্যমে এটা সংশোধন করার সুযোগ আপনারা পাবেন।
জন্ম নিবন্ধন সংশোধন
জন্ম নিবন্ধন সনদ সংশোধন করার জন্য আমরা আপনাদেরকে লিংক প্রদান করছি। তাই সংশোধন করতে হলে আপনারা অবশ্যই
https://bdris.gov.bd/br/correction এই লিংক ব্যবহার করবেন এবং সংশোধন করার পেজে যাবেন। যদি পিতা মাতার তথ্য সংশোধন করার প্রয়োজন হয় তাহলে সেখানে যে তথ্যগুলো আপনাদের উদ্দেশ্যে প্রদান করা হচ্ছে সেগুলো ভালোমতো বুঝে নিবেন। কারণ আপনি যদি তথ্য সংশোধন করার ক্ষেত্রে পিতা মাতার নামের বানান অথবা নাম সংক্রান্ত কোনো তথ্য সংশোধন করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে নির্দিষ্ট নিয়ম অনুসরণ করতে হবে। অর্থাৎ মনগড়া তথ্যের চাইতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রদান করার ভিত্তিতেই তথ্য সংশোধন করার নিয়ম চালু করা হয়েছে।
তাই প্রথম পেজের তথ্যগুলো সঠিকভাবে পূরণ করার পরে আপনারা নিচের দিকে যাবেন। সেখানে আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদের নাম্বার এবং জন্মতারিখ ভালোমতো প্রদান করে তথ্যটি সার্চ করে দেখবেন। যদি এই দুইটি তথ্যের ওপর ভিত্তি করে আপনার সেই জন্ম নিবন্ধনকারী ব্যক্তির নাম সেখানে খুঁজে পাওয়া যায় তাহলে আপনার সেটি হয়ে থাকলে অবশ্যই কনফার্ম করুন অপশনে ক্লিক করতে হবে। তাহলে পরবর্তী পেজে যেতে পারবেন এবং সেখান থেকে আপনাদের জন্ম নিবন্ধন সনদের কাজগুলো শুরু হবে। কিন্তু অনেক সময় জন্ম নিবন্ধন সনদের নাম্বার ও জন্ম তারিখ প্রদান করার পরেও তথ্য খুঁজে না পাওয়া গেলে অনেকেই মনে করেন যে এটা সংশোধন করা হয়তো যাবে না।
কিন্তু প্রত্যেকটি সমস্যারক্ষেত্রে সমাধান অবশ্যই আছে এবং এ বিষয়টি মাথায় রেখে আপনারা সরাসরি স্থানীয় সরকার বিভাগের কাছে চলে যাবেন। কারণ আপনি স্থানীয় সরকার বিভাগের কাছে গেলে তারা আপনাকে বিষয় সহায়তা প্রদান করবে এবং আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদের তথ্যগুলো অনলাইন করতে সাহায্য করবে। সেখানে গিয়ে আপনারা এই তথ্য খুঁজে পাচ্ছেন না বলে জানালে তারা নির্দিষ্ট তথ্যগুলো লিপিবদ্ধ করবে এবং আপনারাও পরবর্তীতে তা খুঁজে পাবেন। তারপরে আপনাদের কেউ ওয়েবসাইটে একই নিয়ম অনুসরণ করে তথ্য যখন খুঁজে পাবেন তখন পরবর্তী পেজে গেলেই ঠিকানা সংক্রান্ত তথ্য প্রদান করতে বলবে। অর্থাৎ আপনারা কোন স্থানীয় সরকার বিভাগ বরাবর এই আবেদন করতে যাচ্ছেন এবং তাদের মাধ্যমে সংশোধিত জন্ম নিবন্ধন সনদ সংগ্রহ করতে যাচ্ছেন সেই তথ্য আপনাদেরকে প্রদান করতে হবে।
সহজে জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করার উপায়
ঠিকানা সংক্রান্ত তথ্য প্রদান করা হয়ে গেলে পরবর্তী পেজে গিয়ে পিতা-মাতার তথ্য প্রদান করা লাগবে। এক্ষেত্রে পিতার নাম উল্লেখ করার পাশাপাশি তাদের জন্ম নিবন্ধন সনদের নাম্বার ও আইডি কার্ডের নাম্বার প্রদান করতে হবে। এছাড়াও আরো সেখানে সুযোগ রয়েছে। আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে অন্যান্য যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করার ক্ষেত্রে সর্ব প্রথমে যে তথ্যগুলো প্রদান করার কথা বলবে সেগুলোই ভালোমতো প্রদান করুন। পিতা মাতার তথ্য প্রদান করা হয়ে গেলে পরবর্তী পেজে যেতে বলবে এবং সেখানে গিয়ে আপনাদের আসল কাজ শুরু হবে।
bdris.gov.bd
ওয়েব সাইটে আপনারা দেখতে পারবেন যে জন্ম নিবন্ধন সনদের তথ্য সংশোধনের আবেদন সর্বোচ্চ চারবার করা যাবে। সংশোধন করার সময় অবশ্যই আপনারা অপশনের মাধ্যমে কোন তথ্যটি সংশোধন করতে চান সেটা নির্বাচন করুন। জন্ম নিবন্ধন সনদে যে সকল তথ্য লিপিবদ্ধ করা থাকে সেগুলোর সবগুলো সংশোধন করা যাবে। তাই আপনারা সঠিকভাবে তথ্য নির্বাচন করবেন এবং তার পাশে ভুল তথ্য কি লিপিবদ্ধ করা হয়েছিল সেটা উল্লেখ করতে হবে। ভুল তথ্যের পরিবর্তে তার সংশোধিত তথ্য হিসেবে আপনারা কি প্রদান করতে চান সেটা উল্লেখ করতে হবে। এরপরে তথ্য নিবন্ধন করার সময় ভুল তথ্য লিপিবদ্ধ করা হয়েছিল এমন একটা কারণ দেখাতে হবে। এভাবে আপনারা চাইলে সিরিয়াল অনুযায়ী একের অধিক তথ্য সংশোধনের কাজ করতে পারেন।
অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের ধাপসমূহ
তথ্য সংশোধন করার ক্ষেত্রে একই নিয়ম অনুসরণ করতে হবে এবং আমরা মনে করি যে আপনারা একটি আবেদনের মাধ্যমে চাইলে অনেকগুলো তথ্য সংশোধন প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের ভিত্তিতে করতে পারেন। এরপরে নিচের দিকে যেতে হবে এবং সেখানে গিয়ে আবেদনকারীর তথ্য প্রদান করতে হবে। আবেদনকারীর বয়স অনুযায়ী নিজের আবেদন করতে পারবে এবং তার বয়স যদি ১৮ বছর পূর্ণ না হয় তাহলে অভিভাবক হিসেবে সেই তথ্য সংশোধনের আবেদন করতে পারবে। পারিবারিক সদস্যের বাইরে যদি কেউ আবেদন করে থাকে তাহলে সেটা অন্যান্য অপশন নির্বাচন করতে হবে। তারপরে আপনাদেরকে জন্ম নিবন্ধন সনদের আবেদনকারীর তথ্যের জায়গায় তার মোবাইল নাম্বার এবং ইমেইল এড্রেস প্রদান করতে হবে।
সেই সাথে আবেদনকারীর নাম এবং আরো যে সকল তথ্য যা হবে সেগুলো প্রদান করবেন। যোগাযোগের নাম্বার হিসেবে যে মোবাইল নাম্বার প্রদান করেছেন সেটা যেন সঠিক হয় সে বিষয়টি আপনাদেরকে নিশ্চিত করতে হবে। কারন সেই নাম্বারে এপ্লিকেশন আইডি নাম্বার যাবে এবং সেই নাম্বার দিয়ে আপনারা পরবর্তীতে আবেদন পত্রের বর্তমান অবস্থা চেক করতে পারবেন। তাই অনলাইনের মাধ্যমে আপনার জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করার জন্য অবশ্যই সঠিক নিয়ম অনুসরণ করার কথা বলব। এরপরে আপনাদেরকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রমাণপত্র হিসেবে ওয়েবসাইটে সাবমিট করতে হবে। প্রত্যেকটি ডকুমেন্টস ২০০ কিলোবাইটের উপরে যেন না হয় সে বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। যে তথ্য সংশোধন করতে চান তার প্রেক্ষিতে কোন কাগজপত্র ওয়েবসাইটে আপলোড করবেন তা অপশনের মাধ্যমে নির্বাচন করবেন। তাহলে সাইডে আপলোড অপশন আসবে এবং সেই আপলোড অপশনে আপনারা ক্লিক করার মাধ্যমে সেগুলো আপলোড করে দিতে পারবেন।
যে বিষয়গুলো মাথায় রাখবেন
আপলোড করা হয়ে গেলে আপনারা নিজের দিকে যাবেন এবং এই যে আবেদন করলেন এটার জন্য আবেদন ফি প্রদান করতে হবে। তাহলে অনলাইনের মাধ্যমে ই চালান ব্যবহার করার মাধ্যমে পেমেন্ট করতে পারেন। আর যদি মনে করেন সরাসরি স্থানীয় সরকার বিভাগের কাছে গিয়ে এটা জমা দিবেন তাহলে তাও প্রদান করার সুযোগ রয়েছে। তাই আপনারা এটা অনুসরণ করার জন্য ফি আদায় অপশন ব্যবহার করবেন। তারপর আপনার আবেদনপত্র সাবমিট করে দেওয়ার পরে সফলভাবে যখন সাবমিট হয়ে যাবে তখন আপনাকে অ্যাপ্লিকেশন আইডি প্রদান করা হবে।
সেই সাথে এই আবেদনপত্র অনলাইন থেকে পিডিএফ ফাইল আকারে ডাউনলোড করা যাবে। আবেদনপত্রের সঙ্গে আপনারা অবশ্যই সেই সকল কাগজপত্র সংযুক্ত করবেন যে সকল কাগজপত্র ওয়েবসাইটে প্রমাণপত্র হিসেবে সাবমিট করেছেন। কাগজপত্র সহকারে আপনারা স্থানীয় সরকার বিভাগের কাছে আবেদন পত্র সাবমিট করার সর্বোচ্চ ১৫ দিনের ভেতরে জমা দিবেন। আবেদনপত্রের ধরন অনুযায়ী সরকারিভাবে অফিশিয়াল নির্দেশনা অনুসরণ করে যে ফি নির্ধারণ করা হয়েছে সেটাই আপনাদেরকে প্রদান করতে বলবে। সবকিছু ঠিকঠাক থেকে থাকলে আপনারা ১৫ থেকে ২০ দিনের ভেতরে জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করে নিতে পারবেন। আশা করি এই পোষ্টের মাধ্যমে জন্ম নিবন্ধন সনদ সংশোধন করার বিস্তারিত তথ্য আপনাদেরকে আমরা বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। ধন্যবাদ।