জন্ম নিবন্ধন ডিজিটাল করার আবেদন কিভাবে করবেন

জন্ম নিবন্ধন ডিজিটাল করার আবেদন কিভাবে করবেন

হাতে লিখে জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরি করার কারণে যারা এখন এটা ডিজিটাল করবেন বলে ভাবছেন অথবা কম্পিউটারে টাইপ করে তৈরি করতে চাচ্ছেন তারা অবশ্যই নির্দিষ্ট নিয়ম অনুসরণ করবেন। জন্ম নিবন্ধন সনদ সংক্রান্ত যে সকল আবেদন জমা পড়ছে সেগুলোর প্রত্যেকটি ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন সনদ হিসেবে প্রিন্ট আউট হয়ে আসছে।

তবে আপনার যদি আগেকার জন্ম নিবন্ধন সনদ হয়ে থাকে এবং এটা যদি আপনি হাতে লিখে তৈরি করতে না চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে ডিজিটাল করতে হবে। ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন সনদে দুইটি ভার্সনে সকল তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। তাই আপনার ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন সোনা তৈরি করার জন্য যে সকল নিয়ম অনুসরণ করতে হবে অথবা যত টাকা আবেদন ফি লাগবে সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য আমরা এই পোস্টের মাধ্যমে আপনাদেরকে জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব। এক পৃষ্ঠায় বাংলা এবং অন্য পৃষ্ঠায় ইংরেজিতে হুবহু তথ্য গুলো খুজে পেতে আপনাকে ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন সনদের জন্য প্রয়োজনীয় ধাপ অনুসরণ করতে হবে।

ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন কাকে বলে

আপনার যদি হাতে লেখা জন্ম নিবন্ধন সনদ থাকে তাহলে সেটা বর্তমানের নিয়ম অনুযায়ী এবং প্রাতিষ্ঠানিক চাহিদা অনুযায়ী ডিজিটাল করে নিতে হবে। কারণ প্রত্যেকটি সরকারি কাজের ক্ষেত্রে হাতে লিখে তথ্য প্রদান করার কোন অপশন নেই এবং প্রত্যেকটি তথ্য অনলাইনের মাধ্যমে নির্দিষ্ট সফটওয়্যার অথবা পোর্টালে লিপিবদ্ধ হচ্ছে বলে এক্ষেত্রে আমাদেরকে সঠিক নিয়ম অনুসরণ করতে হবে। তাছাড়া ডিজিটাল করার মাধ্যমে আপনি আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদকে তথ্য অনুসন্ধানের উপযোগী করে তুলতে পারবেন এবং অফিশিয়াল ওয়েবসাইট ভিজিট করার মাধ্যমে তথ্য অনুসন্ধান করার পাশাপাশি আবেদন করে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন। তাই আপনাদের উদ্দেশ্যে আমরা ডিজিটাল করার জন্য যে বিষয়গুলো জানিয়ে দিচ্ছে সেগুলো আপনারা অনুসরণ করুন।

প্রকৃতপক্ষে আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদ যদি কোন ধরনের ভুল ভ্রান্তি না হয়ে থাকে তাহলে তথ্য সংশোধন করার প্রয়োজন নেই। কারণ তথ্য সংশোধন করার মাধ্যমে এটা ডিজিটাল করা যায় এবং একই সাথে দুই কাজ সম্পন্ন হয়। তাই তথ্যগত ভুল যদি না থেকে থাকে তাহলে আপনারা সরাসরি স্থানীয় সরকার বিভাগের কাছে যেতে পারেন। এক্ষেত্রে স্থানীয় সরকার বিভাগ বলতে ইউনিয়ন পরিষদ অথবা সিটি কর্পোরেশনের প্রধান অফিসকে বোঝানো হয়ে থাকে অথবা এটি যদি পৌরসভার আওতাধীন হয়ে থাকে তাহলে পৌরসভা কে বোঝানো হয়ে থাকবে। তাই আপনারা প্রত্যেকটি কাজ সম্পন্ন করার জন্য যথার্থ নিয়ম অনুসরণ করলে অথবা আমাদের ওয়েবসাইটের প্রদান করা পোস্ট পড়লে এগুলো সম্পর্কে জানতে পারবেন।

অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন ডিজিটাল করতে কত টাকা লাগে

আপনাদের যদি এলাকার কাউন্সিলর ভালো হয়ে থাকেন এবং দায়িত্ববান হয়ে থাকেন তাহলে তারাও এগুলো নিজ দায়িত্বে করে দিয়ে থাকবেন। সাধারণত জন্ম নিবন্ধন ডিজিটাল করতে হলে আবেদন ফি হিসেবে 50 টাকা গ্রহণ করতে হবে। অর্থাৎ জন্ম নিবন্ধন সনদের কোন ডকুমেন্টস যদি আমরা স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে সংগ্রহ করতে চাই তাহলে সেটার ফি হিসেবে ৫০ টাকা ধার্য করা হয়েছে। তাই কোন এলাকার কাউন্সিলর অথবা মেম্বার যদি আপনাদের থেকে এটা ডিজিটাল করার জন্য পূর্বের কপি এবং ৫০ টাকা দাবি করে থাকে তাহলে তাদেরকে নিজ দায়িত্বে এগুলো প্রদান করুন। এতে করে আপনার সময় এবং শ্রম দুটোই বাঁচবে।

তাহলে তারা নিজ দায়িত্বে এগুলো ওয়েবসাইটে লিপিবদ্ধ করবে এবং জন্ম নিবন্ধন সনদের তথ্যগুলো লিপিবদ্ধ করার পর তাদের অফিশিয়াল লগইন করার মাধ্যমে এটা প্রিন্ট আউট করবে। তারপরে সেখানে প্রয়োজনীয় স্বাক্ষর প্রদান করার মাধ্যমে আপনাদের কাছে হস্তান্তর করবে। সচেতন নাগরিক হিসেবে এবং ডিজিটাল দেশের নাগরিক হিসেবে আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদ যদি ডিজিটাল না হয় তাহলে নিজ দায়িত্বে অথবা কাউন্সিলর এর মাধ্যমে এটা ডিজিটাল করে নিতে পারেন। ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন সনদে কোন ধরনের হাতে লেখা তথ্য থাকবে না এবং প্রত্যেকটি কাজ সেখানে আপনারা বাংলা এবং ইংরেজি ভার্সনে দুই পেজে পেয়ে যাবেন। এছাড়াও আপনারা যদি নতুন নিবন্ধনের ক্ষেত্রে ডিজিটাল পদ্ধতি অনুসরণ করতে চান তাহলে নিচের দেখানোর নিয়ম অনুসরণ করবেন।

বর্তমানে যারা নতুন নিবন্ধন করছেন অথবা তথ্য সংশোধন করছেন তাদেরকে ডিজিটাল পদ্ধতি অনুসরণ করে এগুলো করতে হচ্ছে। বিডিআরআইএস এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইট ভিজিট করার মাধ্যমে আমরা এই কাজগুলো সম্পন্ন করতে পারছি। সেখানে গিয়ে আমরা নতুন তথ্য নিবন্ধন এর জন্য আবেদনের অপশনে গেলে আমাদেরকে বেশ কয়েকটি ধাপ অতিক্রম করতে হচ্ছে অথবা প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের ভিত্তিতে আবেদন করতে হচ্ছে। প্রথমত আপনি যদি জন্ম নিবন্ধন ডিজিটাল পদ্ধতিতে আবেদন করে আবেদন পত্রের ভিত্তিতে অরজিনাল কপি সংগ্রহ করতে চান তাহলে
https://bdris.gov.bd/br/application এই লিংক ব্যবহার করে আবেদন করার পেজে চলে যাবেন। তারপরে কোন ঠিকানার ভিত্তিতে আবেদন করতে চান সেটা নির্বাচন করবেন এবং সুবিধা অনুযায়ী নির্দিষ্ট একটা ঠিকানা নির্বাচন করতে আবেদন করলেই হবে।

দ্রুত সময়ের মধ্যে জন্ম নিবন্ধন ডিজিটাল করার উপায়

পরবর্তী ধাপে গিয়ে যার জন্য জন্ম নিবন্ধন সনদ ডিজিটাল পদ্ধতিতে তৈরি করবেন তার নাম থেকে শুরু করে জন্ম তারিখ এবং অন্যান্য তথ্যগুলো প্রদান করতে হবে। যে ঠিকানার ভিত্তিতে আবেদন করতে চাইছেন অথবা যে ঠিকানার ভিত্তিতে নির্দিষ্ট অফিস থেকে জন্ম নিবন্ধন সনদের অরিজিনাল ডকুমেন্ট সংগ্রহ করতে চাইছেন সেই অফিসের ঠিকানা নির্দিষ্ট ভাবে এবং নির্ভুলভাবে প্রদান করুন। আপনার প্রথম পেজের তথ্যগুলো লিপিবদ্ধ করা হয়ে গেলে পরবর্তী পেজে গেলে আপনার পিতামাতার তথ্য প্রদান করতে হবে। বর্তমান সময়ের নিয়ম অনুযায়ী পিতা-মাতার জন্ম নিবন্ধন সনদ থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এবং তাদের জন্ম নিবন্ধন সনদ থাকতে হবে। সেই সাথে এনআইডি কার্ডের নাম্বার ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য পূরণ করার ভিত্তিতে পরবর্তী পেজে যাবেন।

ডিজিটাল করার উদ্দেশ্যে যখন পরবর্তী পেজে যাবেন তখন আপনাকে স্থায়ী ঠিকানা প্রদান করতে হবে। আর যদি প্রথমেই স্থায়ী ঠিকানা প্রদান করেন তাহলে পরবর্তীতে বর্তমান ঠিকানা প্রদান করা লাগবে। এভাবে আপনারা ঠিকানা সংক্রান্ত তথ্য প্রদান করার পর জন্ম তারিখের তথ্য প্রদান করার সময় যে সকল কাগজপত্র থাকার কথা বলা হয়েছিল সেগুলো রয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হয়ে নিন। যদি কম্পিউটারের মাধ্যমে আবেদন করেন তাহলে সেখানে আপনাদেরকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সাবমিট করতে হবে অথবা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে করলেও নির্দিষ্ট রেজুলেশন এর ভেতরে সেগুলো আপলোড করতে হবে।

বয়স অনুযায়ী আবেদনকারীর প্রত্যেকটি তথ্য নির্দিষ্ট ফরমেটে এবং নির্দিষ্ট রেজুলেশনের ভেতরে ওয়েব সাইটে আপলোড করতে হবে। আপলোড করার পর আবেদনকারীর তথ্য প্রদান করতে হবে এবং আবেদনকারী নিজেই হয়ে থাকলে সেটা প্রদান করবেন। আর পরিবারের সদস্য হয়ে থাকলে সেই সদস্যের সঙ্গে আবেদনকারীর কি সম্পর্ক সেটা প্রদান করবেন। তাছাড়া আপনার যদি কেউ না হয় তাহলে অন্যান্য সম্পর্ক নির্বাচন করে আবেদন সম্পন্ন করুন। বয়স অনুযায়ী আবেদন ফি প্রদান করতে হবে বলে আপনারা অবশ্যই সেটা অফিসে গিয়ে প্রদান করার চেষ্টা করুন। তাছাড়া স্থানীয় সরকার বিভাগ আপনাদের থেকে এই পেমেন্ট গ্রহণ করবে বলে সেখানে প্রদান করাটাই সবচেয়ে ভালো হবে।

উপসংহার

প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করার ভিত্তিতে যখন আবেদনপত্র সাবমিট করে দিলেন তখন সেটা সফলভাবে সাবমিট হয়ে যাবে। তারপরে আমরা আপনাদেরকে এ বিষয়গুলো জানিয়ে দিচ্ছি বলে স্থানীয় সরকার বিভাগের কাছে আবেদন পত্র আউট করে নিয়ে চলে যাবেন। আবেদন করার ১৫ দিনের ভিতরে যদি আবেদনপত্র জমা দেন তাহলে তা বাতিল হয়ে যাবে। তাই নির্দিষ্ট নিয়ম অনুসরণ করে আপনারা প্রত্যেকটি কাজ সম্পন্ন করলে দুই থেকে তিন কর্ম দিবসের ভেতরে আপনাদেরকে জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রদান করা হবে। সেজন্য আপনারা ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন সনদ পেয়ে যাবেন এবং তথ্য প্রদান করার সময় আপনাদের তথ্যের উপর ভিত্তি করে দুই ভার্সনেই এটা প্রদান করা হবে। তাই পুরাতন হয়ে থাকলে সেটা ডিজিটাল করার জন্য উপরের নিয়ম অনুসরণ করুন এবং নতুন ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরি করতে হলে বিডিআরআইএস এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইট ভিজিট করে আবেদন করুন।

bdris.gov.bd