জন্ম নিবন্ধন সংশোধন আবেদন বর্তমান অবস্থা চেক করার উপায়

জন্ম নিবন্ধন সংশোধন আবেদন বর্তমান অবস্থা চেক করার উপায়

জন্ম নিবন্ধন সনদের তথ্য সংশোধন করার পরেও আমাদের সেই তথ্য সংশোধন আর হয়ে উঠে না। তথ্য সংশোধনের জন্য সঠিক নিয়ম অনুসরণ না করার কারণে এবং প্রয়োজনীয় প্রমাণপত্র সাবমিট না করার কারণে এমনটা হয়ে থাকে। তাই আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদ সংশোধন হয়েছে কিনা এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগ যদি কোন ধরনের আপডেট দিতে না চাই অথবা আপনারা যদি ঘরে বসে আপডেট পেতে চান তাহলে নির্দিষ্ট নিয়ম অনুসরণ করার কথা বলব।

তথ্য সংশোধন থেকে শুরু করে অন্যান্য আবেদনের ক্ষেত্রে আবেদন পত্রের বর্তমান অবস্থা যাচাই করার সুযোগ কর্তৃপক্ষ ওয়েবসাইটে চালু করেছেন। তাই আপনি যখন কোন আবেদনপত্র সাবমিট করবেন তখন সেখানে একটা অ্যাপ্লিকেশন আইডি নাম্বার প্রদান করা হবে। সেই নাম্বার ধরেই আপনাদেরকে জন্ম নিবন্ধন সনদের তথ্য সংশোধনের এই আবেদনের বর্তমান অবস্থা কিরূপ দাঁড়িয়েছে তা যাচাই করে নিতে পারবেন। আমরা মনে করি যে এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনাদের আবেদন পত্র যাচাই করে নেওয়াটা অত্যন্ত ভালো হবে এবং এটাই হবে সহজ পদ্ধতি।

জন্ম নিবন্ধন সংশোধন আবেদন কি

যারা অতীতে হাতে লিখে জন্ম নিবন্ধন সনদের তথ্য নিবন্ধন করেছেন তারা ইচ্ছামত তথ্যে বসিয়ে থাকার কারণে পরবর্তীতে সংশোধন করার আবেদন করতে হচ্ছে।যেহেতু জন্ম নিবন্ধন সনদ আপনার জীবনের প্রথম সরকারিভাবে প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তিতে প্রদান করা পরিচয়পত্র সেহেতু এখানে ভুল হলে পরবর্তীতে অন্যান্য ডকুমেন্টস ও ভুল হওয়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু আমরা যদি এই ভুলগুলো আগে থেকে সংশোধন করে নিতে না পারি তাহলে পরবর্তীতে তার সংশোধন হবে না। তাই তথ্য নিবন্ধন করার সময় এই আমাদেরকে সচেতন ভূমিকা পালন করতে হবে এবং প্রত্যেকটি তথ্য যেন সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ হয়ে থাকে সে বিষয়ে আমাদের সতর্ক ভূমিকা পালন করতে হবে।

আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদ নিজের একটা ব্যক্তিগত পরিচয় পত্র। এক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধনের আসল মালিক যদি বয়সে কম হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই তার অভিভাবকের সঠিকভাবে তৈরি করে দিবেন। নামের আগে মোহাম্মদ অথবা অন্য কোন টাইটেল ব্যবহার করবে কিনা এ বিষয়ে সঠিক ভূমিকা পালন করতে হবে। তেমনিভাবে পিতা-মাতার এনআইডি কার্ড দিয়ে এটার তথ্য নিবন্ধন করা প্রয়োজন। ঠিকানা সংক্রান্ত তথ্য প্রদান করার ক্ষেত্রে একই নিয়ম অনুসরণ করতে হবে যাতে ভবিষ্যতে কোনো তথ্য সংশোধন করার প্রয়োজন না পড়ে। কিন্তু আমরা অনেক সময় অসাবধানতার কারণে এগুলো করে থাকে এবং পরবর্তীতে তথ্য সংশোধন করতে গিয়ে অনেক ঝামেলায় পড়ি।

বিশেষ করে যাদের বাড়ি একেবারে গ্রামে এবং পড়ালেখা জানেন না তাদের জন্য তথ্য সংশোধন করার ক্ষেত্রে অনেকেই অনেক টাকা দাবি করে বসে থাকেন। কিন্তু বর্তমান সময়ে এক্ষেত্রে আপনি অফিসিয়াল ভাবে ফি প্রদান করতে পারবেন বলে এবং নিজের আবেদন নিজে করতে পারবেন বলে কোন সমস্যা হবে না। তাছাড়া গ্রাম পর্যায়ে যারা চৌকিদার অথবা অন্য কোন ব্যক্তি দিয়ে এই কাজগুলো করে নিতেন তাদের অধিক টাকা প্রদান করার প্রয়োজন নেই। জন্ম নিবন্ধন সনদের তথ্য সংশোধন ফি হিসেবে ৫০ থেকে ১০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তাই কেউ যদি এর চাইতে বেশি টাকা দাবি করে তাহলে অবশ্যই আপনার নিজ দায়িত্বে তথ্য সংশোধন করবেন এবং এই ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ অনলাইন খরচ ৫০ থেকে ১০০ টাকা গ্রহণ করা হতে পারে।

কিভাবে জন্ম নিবন্ধন সংশোধন আবেদনের বর্তমান অবস্থা জানা যায়

তবে আপনার আবেদন করতে হবে সূক্ষ্মভাবে যাতে করে কর্তৃপক্ষ বুঝতে পারে আসলেই আপনার তথ্য সংশোধন করা প্রয়োজন। তাহলে কর্তৃপক্ষ আপনার প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের ভিত্তিতে তথ্য সংশোধন করে দিবে। আপনি যদি তথ্য সংশোধনের আবেদন করে থাকেন তাহলে সেটা সংশোধন হতে ১৫ থেকে ২০ দিনের মতো সময় লাগে। কিন্তু তথ্য সংশোধন করার সঠিক নিয়ম অনুসরণ না করতে পারলে কর্তৃপক্ষ এই আবেদন পত্র যেমন গ্রহণ করবে না তেমনি ভাবে আপনাদের তথ্য সংশোধনের কাজ আগাবে না। তাই সংশোধন করার ক্ষেত্রে আমরা নিজ দায়িত্বে নিজে পালন করব এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হিসেবে কি কি প্রদান করতে হবে তা অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের থেকে জেনে নিতে পারি।

জন্ম নিবন্ধন সনদের তথ্য সংশোধন করার জন্য আপনাদেরকে ওয়েবসাইট ভিজিট করে সেখানে প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করে আবেদন করতে হবে। তথ্য সংশোধনের জন্য বিশেষ করে জন্ম নিবন্ধনকারী ব্যক্তির এনআইডি কার্ড অথবা মাধ্যমিক পরীক্ষার সার্টিফিকেট ব্যবহার করা হয়ে থাকে। পিতা মাতার তথ্য সংশোধন করার প্রয়োজন হলে তাদের জন্ম নিবন্ধন ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য প্রদান করা লাগে। তবে কোন কিছু দিয়েই যদি কাজ না হয় তাহলে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের উপজেলা ভিত্তিক যে অফিস রয়েছে সেখানে ২৩০ টাকা ফি প্রদান করার মাধ্যমে এটার সার্টিফাইড কপি সংগ্রহ করতে হয়। তাহলে কর্তৃপক্ষ সেটা গ্রহণ করে এবং সার্টিফাইড কপির ভিত্তিতে তথ্য সংশোধন করে দেয়।

আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদের তথ্য সংশোধনের পর যে আবেদন করলেন সেই আবেদনের সাথে সাথে একটা অ্যাপ্লিকেশন আইডি বা কয়েক ডিজিটের নাম্বার প্রদান করা হয়ে থাকে। তাছাড়া আবেদনকারীর তথ্যের জায়গায় যে মোবাইল নাম্বার প্রদান করেছিলেন সেই মোবাইল নাম্বারেও আপনাদেরকে এসএমএস এর মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে। এই যে অ্যাপ্লিকেশন আইডি সংগ্রহ করে রাখলেন এটার ভিত্তিতে আবেদন পত্র হারিয়ে গেলে পরবর্তীতে আবার ওয়েবসাইট থেকে পিডিএফ ফাইল আকারে ডাউনলোড করতে পারবেন। সেই সাথে আবেদনপত্র যাচাই করার জন্য আপনাদেরকে যে কাজ করতে হবে তা এখন আমরা সহজ ভাবে বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব।

আবেদনপত্রের বর্তমান অবস্থা চেক করার জন্য কি করতে হবে

https://bdris.gov.bd/br/application/status এই লিংক ব্যবহার করে সরাসরি অফিশিয়াল ওয়েবসাইটের তথ্য যাচাই করার পেইজে যেতে বলব। এখানে গিয়ে আপনাকে সর্বপ্রথমে কোন ধরনের আবেদন করেছেন সেটা নির্বাচন করতে হবে। আপনি যেহেতু তথ্য সংশোধনের আবেদন করেছেন সেহেতু সেটা নির্বাচন করবেন। তথ্য সংশোধনের আবেদনের এই কাজগুলো শেষ হয়ে গেলে আপনারা খুব সহজেই নিচে গিয়ে সেই অ্যাপ্লিকেশন আইডি প্রদান করবেন। তারপরে আপনার জন্ম তারিখ প্রদান করতে হবে। যদি জন্ম তারিখের তথ্যই সংশোধন করা লাগে তাহলে বর্তমানে যে ভুল জন্ম তারিখ প্রদান করা আছে সেটাই প্রদান করে সার্চ করে দেখবেন। প্রদত্ত তথ্য যদি সঠিক হয়ে থাকে তাহলে সার্চ করার মাধ্যমে নিচের দিকে আপনার জন্য এই আবেদনপত্রের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে একটা লিস্ট চলে আসবে।

সেক্ষেত্রে আপনারা সেখান থেকে যাচাই করে দেখতে পারবেন যে আপনার এই আবেদনপত্র গ্রহণ করা হয়েছে কিনা। যদি কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করে থাকে তাহলে সেটা তথ্য সংশোধনের কাজ চলমান থাকলে আপনাকে জানিয়ে দেয়া হবে। আর যদি তথ্য সংশোধন হয়ে যায় তাহলে আপনাকে সেটাও সেখানে সংক্ষিপ্ত বিবরণীর মাধ্যমে জানিয়ে দেবে। আর যদি আপনি স্থানীয় সরকার বিভাগের মাধ্যমে এটা সংগ্রহ করতে যান এবং তথ্য যদি সংশোধিত হয়ে থাকে তাহলে স্থানীয় সরকার বিভাগ এটা প্রিন্ট আউট করেছে বলে একটা সংক্ষিপ্ত সামারি চলে আসবে। এভাবেই আপনারা বুঝতে পারবেন আপনার তথ্য সংশোধন করা হয়েছে কিনা এবং তথ্য সংশোধনের আপডেট তথ্য সম্পর্কে সেখানে কি দেখানো হচ্ছে।

সবশেষে যা জানা প্রয়োজন

তবে জন্ম নিবন্ধন সনদের তথ্য সংশোধন করা খুব বেশি কঠিন কাজ নয়। কিন্তু অনেক সময় তথ্য সংশোধনের আবেদন করেও আমাদের সেই বিষয়গুলোর সমাধান হয় না। সঠিকভাবে এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সাবমিট করার মাধ্যমে আবেদন করলে কার্যকরী উপায়ে এটা সংশোধন হয়ে যাবে। আমরা মনে করি যে এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা তথ্য সংশোধনের আবেদনের বর্তমান অবস্থা যাচাই করার সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে অবগত হতে পেরেছেন। এ প্রসঙ্গে যদি কেউ বুঝতে না পারেন অথবা কারো যদি এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে লিখে জানাবেন। আমরা আপনাদেরকে সর্বোচ্চ অভিজ্ঞতার আলোকে সমাধান প্রদান করার চেষ্টা করব। কারণ এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস এবং এখানে ভুল হওয়া মানেই আপনার পরবর্তী ডকুমেন্টসগুলোতে ও ভুল তথ্য লিপিবদ্ধ হবে।

bdris.gov.bd