জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করার নিয়ম
জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করার নিয়ম জানতে যারা এখানে ভিজিট করেছেন তাদের উদ্দেশ্যে এই নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আলোচনা করা হবে। বর্তমানে হাতে লেখা জন্ম নিবন্ধন সনদ তথ্য পূরণ করার কোন সিস্টেম নেই। তাই আপনাদেরকে যদি নতুন জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরি করতে হয় তাহলে অনলাইনের মাধ্যমে করতে হবে। এমনকি পুরাতন জন্ম নিবন্ধন সনদ নতুন ভাবে তৈরি করতে চাইলেও অনলাইনের সহায়তা গ্রহণ করতে হবে।
আমরা দৈনন্দিন জীবনে জন্ম নিবন্ধন সনদের অনেক প্রয়োগ দেখতে পাই। আপনারা জরুরী ভিত্তিতে পাসপোর্ট ভিসা তৈরি করতে পারবেন না এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনাদেরকে সহজ ভাবে বিষয়গুলো বুঝিয়ে দিচ্ছে বলে আপনারা তা জেনে নিতে পারছেন এবং জন্ম নিবন্ধন সনদ সংক্রান্ত কাজ করতে পারছেন। তাই নতুন যারা আছেন তারা কিভাবে অনলাইনের মাধ্যমে জন্ম নিবন্ধন সনদ করবেন তা জেনে নিতে পারেন।
ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন কি
সাধারণত আমরা যদি কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ভর্তি করাতে চাই এবং কোন ডকুমেন্টস ছাড়াই সেখানে যাই তাহলে দেখা যাবে যে সেই শিক্ষার্থীকে ভর্তি করা সম্ভব হবে না। কারণ প্রত্যেকটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এই নিয়ম চালু করা হয়েছে এবং জন্ম নিবন্ধন সনদ পাওয়ার জন্য প্রত্যেক বছর বছরের প্রথম দিকে এটা গ্রহণ করার জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগে অনেক চাপ থাকে। তাছাড়াও অতীতে জন্ম নিবন্ধন সনদের প্রতি গুরুত্বপূর্ণ প্রদান করেননি এমন অনেকে আছেন যারা স্থানীয় সরকার বিভাগের অফিসে মাঝেমধ্যেই যোগাযোগ করেন যে এটা কিভাবে সংশোধন করবেন।
অর্থাৎ জন্ম নিবন্ধন সনদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা ডকুমেন্টস হওয়ার কারণে আমাদের সকলের উচিত এটা গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা এবং তথ্য লিপিবদ্ধ করার সময় সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ করা। প্রথম দিকে যখন জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরি করার জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য লিপিবদ্ধ করা হয়েছিল তখন খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ করা হয়নি। ফলে যার মাধ্যমে তথ্য নিবন্ধন করা হয়েছে সে ব্যক্তিও কোন রকম ভাবে তথ্য লিখে এসেছেন এবং যারা তথ্য প্রদান করেছেন তারাও কোনো রকম ভাবে তথ্যগুলো পূরণ করে এটার কাজ শেষ করেছেন। কিন্তু আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদ এখন বিভিন্ন ডকুমেন্টস এর সঙ্গে মিলাতে গেলে দেখা যাচ্ছে যে তথ্যগত ভুল আছে বলে আপনি অনেক সমস্যায় পড়ছেন। তাই আমরা জন্ম নিবন্ধন সনদ বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য আপনাদের সামনে উপস্থাপন করে চলেছে বলে আপনারা এগুলো জানতে পারছেন এবং জন্ম নিবন্ধন সনদের তথ্য সংশোধন করতে পারছেন।
এপর্যন্ত যতজন জন্ম নিবন্ধনের সেবা নিয়েছে
আমরা আপনাদের উদ্দেশ্যে জন্ম নিবন্ধন সনদ বিষয়ে যে বিষয়গুলো এখন আলোচনা করব তাতে করে আপনারা নতুন জন্ম নিবন্ধন তৈরি করার ক্ষেত্রে অনুসরণ করতে পারবেন। যারা অনলাইনের মাধ্যমে জন্ম নিবন্ধন তৈরি করতে চান তাদের উদ্দেশ্যে বলবো যে বিডিআরআইএস এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ভিজিট করতে হবে। সেখানে ভিজিট করার পর আপনারা জন্ম নিবন্ধন সনদ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো করতে পারবেন। যেহেতু অনলাইনের মাধ্যমে বর্তমান সময়ে প্রত্যেকটি কাজ পরিচালিত হয়ে আসছে সেহেতু আমরা যদি অনলাইনে নিয়ম না মানি তাহলে নিজেদের তথ্য নিজেরাই ওয়েবসাইটে লিপিবদ্ধ করতে পারবো না।
আর আমাদের তথ্য লিপিবদ্ধ না করার কারণে কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোন কাজ করতে পারবে না এবং অরিজিনাল ডকুমেন্টস আমরা কখনোই হাতে পাবো না। তাই নতুন জন্ম নিবন্ধন সনদ অনলাইন করার জন্য আমরা আপনাদেরকে https://bdris.gov.bd/br/application এই লিংক ব্যবহার করতে বলবো। এই লিংক ব্যবহার করতে পারলে সরাসরি অফিশিয়াল ওয়েবসাইট ভিজিট করার মাধ্যমে সেখান থেকে আবেদনের যাবতীয় বিস্তারিত তথ্য জেনে নিতে পারবেন।
যেহেতু আবেদন করতে চাইছেন সেহেতু কোন ঠিকানার ভিত্তিতে আবেদন করবেন সেটা সর্বপ্রথমে নির্বাচন করতে হবে। অর্থাৎ আপনাদের অবস্থান অনুযায়ী নির্দিষ্ট অফিস থেকে জন্ম নিবন্ধন সনদ সংগ্রহ করবেন বলে আপনাদের সুবিধা অনুযায়ী সেটা প্রদান করুন। যদি কেউ দেশের বাইরে থেকে থাকেন তাহলে আপনারা খুব সহজেই দূতাবাসের মাধ্যমে আবেদন করার সুযোগ পাবেন।
bdris.gov.bd
তাই ওয়েবসাইট ভিজিট করে আপনারা যখন জন্ম নিবন্ধন সনদের এই কাজ করবেন তখন অবশ্যই ঠিকানা সংক্রান্ত তথ্য প্রদান করে পরবর্তী পেজে গেলে যার জন্য জন্ম নিবন্ধন করবেন তার বিস্তারিত তথ্য প্রদান করতে হবে। বিশেষ করে প্রত্যেকটি মানুষের নাম থাকে এবং এই নাম আজীবন তাকে ব্যবহার করতে হয়। তাই এমন একটি নাম ব্যবহার করুন যেটা সার্টিফিকেটে দিলে ভালো হবে এবং এই তথ্যের ভিত্তিতে সার্টিফিকেট তৈরি হবে বলে সুন্দর একটা নাম আগে থেকে নির্বাচন করে রাখুন। নামের প্রথম অংশ এবং শেষ অংশ বাংলায় যেভাবে বসিয়ে দিবেন ঠিক একইভাবে ইংরেজিতেও প্রদান করবেন। জন্ম নিবন্ধন সনদের নাম প্রদান করা হয়ে গেলে নিচে গিয়ে জন্ম তারিখ প্রদান করতে হবে।
জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করার সময় যে সকল সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে
আপনারা যখনই জন্ম তারিখ প্রদান করবেন ঠিক তখনই আপনাদের এই তথ্য নিবন্ধনের জন্য বেশ কিছু প্রমাণপত্র রয়েছে কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত করতে বলবে।কারণ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যদি আপনার সংগ্রহে না থেকে থাকে তাহলে আপনারা এটা দ্বারা কোন কাজ করতে পারবেন না। তাই জন্ম নিবন্ধন সনদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিজেদের সংগ্রহে থেকে থাকলে সেটা দিয়ে আপনারা আবেদন করতে পারবেন এবং সেটার ভিত্তিতে আপনার আবেদন পুনরায় চালিয়ে যেতে বলবে। এরপরে আপনি পরিবারের কততম সন্তান এবং আপনার ধর্ম বিষয়ক তথ্য গুলো প্রদান করবেন। অর্থাৎ একজন মানুষের দৈনন্দিন জীবনে যে সকল তথ্যের ভিত্তিতে খুব সহজেই চেনা যায় সে বিষয়গুলো আমাদেরকে উপস্থাপন করতে হবে।
পরবর্তী পেজে যাওয়ার সাথে সাথে পিতা মাতার তথ্য প্রদান করার অপশন চলে আসবে। অর্থাৎ পিতা এবং মাতার নাম কি তা আলাদা ভাবে আলাদা করে প্রদান করতে হবে। সেই সাথে পিতা মাতার বর্তমান সময়ের নিয়ম অনুযায়ী জন্ম নিবন্ধন এনআইডি কার্ডের নাম্বার ব্যবহার করতে হবে। তারা পেশাজীবী হিসেবে দৈনন্দিন জীবনে কোন কর্মের সঙ্গে জড়িত রয়েছে সে বিষয়গুলো উল্লেখ করার পরেই পরবর্তী পেজে গিয়ে বর্তমান ঠিকানা অথবা স্থায়ী ঠিকানা তথ্য প্রদান করবেন। এক্ষেত্রে আপনারা যে তথ্যের ভিত্তিতে আবেদন করছেন অথবা যে ঠিকানা ব্যবহার করে আবেদন করেছেন সেই ঠিকানার বিপরীত তথ্য আপনাদেরকে এখানে প্রদান করা লাগবে। তবে স্থায়ী ঠিকানা প্রদান করলে সবচাইতে ভালো হয় এবং এর মাধ্যমে জন্ম নিবন্ধন সনদের এই তথ্যগুলো নির্দিষ্ট অফিসে আপনাদের জন্য লগইন হয়ে যাবে।
তাই ওয়েবসাইট থেকে আপনারা যখন জন্ম নিবন্ধন সনদের কাজগুলো শেষ করবেন তখন অবশ্যই আবেদনকারী তথ্যের জায়গায় যিনি জন্ম নিবন্ধনের তথ্য নিবন্ধন করেছেন তিনি নিজেও হতে পারেন অথবা পরিবারের অন্য কোন সদস্য হলে সেই সম্পর্ক সেখানে প্রদান করতে হবে। এরপরে আপনাদেরকে জন্ম নিবন্ধন সনদের সেই আবেদনকারীর তথ্যের জায়গায় তার মোবাইল নাম্বার এবং ইমেইল এড্রেস প্রদান করতে হবে। অর্থাৎ এই মোবাইল নাম্বার গুরুত্বপূর্ণ এবং মোবাইল নাম্বারের মাধ্যমে আপনারা একটা অ্যাপ্লিকেশন আইডি পেয়ে যাবেন।
সর্বশেষ কথা
আবেদনকারী তথ্যের পর যে সকল কাগজপত্র আপনাদের রয়েছে কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে বলেছিল সে সকল কাগজপত্র রয়েছে কিনা তা আপনারা এখন আপলোড করার মাধ্যমে নিশ্চিত করে দিবেন। নির্দিষ্ট কাগজপত্র বাম পাশের অপশন থেকে নির্বাচন করবেন এবং আপলোড অপশনে গিয়ে সেখান থেকে আপলোড করে দিবেন। আপলোড করা হয়ে গেলে আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদ এর আবেদন পত্র সাবমিট করার পূর্বে ফি আদাই অপশনটি নির্বাচন করবেন।
এখন আপনাকে আবেদন পত্রটি সাবমিট করতে হবে এবং কোথাও কোন ধরনের ভুল ভ্রান্তি না হয়ে থাকলে আপনারা সেটা সাবমিট করে দিলেই কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করবে। আবেদনপত্র ডাউনলোড করে নেওয়ার পর সেটার পিডিএফ ফাইল আপনারা যখন প্রিন্ট আউট করবেন তখন সেটা নিয়ে এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। তাহলে অনলাইনে মাধ্যমে আপনি যে তথ্যগুলো নিবন্ধন করলেন তার ভিত্তিতে কর্তৃপক্ষ সেটা ডাউনলোড করবে এবং স্বাক্ষর সহকারে আপনাদেরকে অরিজিনাল ডকুমেন্টস প্রদান করবেন।