অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন আবেদন দ্রুত নিষ্পত্তি হওয়ার উপায়

অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন আবেদন দ্রুত নিষ্পত্তি হওয়ার উপায়

অনলাইনের মাধ্যমে জন্ম নিবন্ধন আবেদন করে নিতে পারেন এবং এক্ষেত্রে আপনাদেরকে বেশ কিছু নিয়ম অনুসরণ করতে হবে। আগে হাতে লিখে ফরম পূরণ করার মাধ্যমে স্থানীয় সরকার বিভাগের কাছে এই আবেদন ফরম দিয়ে দিলেই তারা জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরি করলে দিত। কিন্তু অফলাইনের পরিবর্তে বর্তমান সময়ে অনলাইনে এ সিস্টেম চালু করার পর থেকে আমরা নিজ দায়িত্বে কাজগুলো সম্পন্ন করতে পারছি। তাই বর্তমানে কোন পরিবারের যদি শিশু সন্তান জন্মগ্রহণ করে থাকে তাহলে ৪৫ দিনের ভেতরে আপনারা যদি অনলাইনে এই আবেদন করেন তাহলে কোন ধরনের আবেদন ফি ছাড়াই এটা তৈরি করতে পারবেন।

তাছাড়া কোন শিশু জন্মগ্রহণ করার পর আমরা যদি আবেদন করি তাহলে সেই অনুযায়ী আবেদনের সময় যে সকল কাগজপত্র প্রমাণপত্র হিসেবে কাজ করে সেগুলো সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারব। তাই আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরি করা বিষয়ে সঠিক তথ্য সম্পর্কে অবগত হওয়ার চেষ্টা করুন এবং সেই নিয়ম অনুযায়ী অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করুন।

জন্ম নিবন্ধন আবেদন

হাতে লিখে জন্ম নিবন্ধন সনদের তথ্য যদি পূরণ করেন তাহলে দেখা যাবে যে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয়ে থাকবে। কিন্তু অনলাইনের মাধ্যমে আপনারা যখন যথেষ্ট প্রমাণপত্র সাবমিট করার মাধ্যমে আবেদন করবেন তখন প্রত্যেকটা কাগজের সঙ্গে প্রত্যেকটা তথ্য সম্পর্কিত থাকার কারণে কোন ভুল হবে না। সাধারণত জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরি করার পর আমরা যে সকল ভুলগুলো দেখতে পাই সেগুলো সংশোধন যাতে করা না লাগে অথবা সেগুলো যাতে প্রথমেই সব নিষ্পত্তি হয়ে যায় তার জন্য আমাদেরকে সঠিকভাবে আবেদন করতে হবে। জন্ম নিবন্ধন সনদের আবেদন নিয়ম এখানে আপনাদেরকে বিস্তারিত ভাবে জানিয়ে দেওয়া হল এবং আপনারা এই নিয়ম অনুসরণ করার মাধ্যমে নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটের লিংক ব্যবহার করে আবেদন করুন।

মোটামুটি ভাবে 2017 সালের পর থেকে বিডিআর‌আইএস নামক অফিসিয়াল ওয়েবসাইট তৈরি হয়েছে এবং সেখান থেকে আমরা জন্ম নিবন্ধন সনদ সংক্রান্ত যাবতীয় সেবা গ্রহণ করছি। তাই আপনার যখন জন্ম নিবন্ধন সনদের আবেদন করার প্রয়োজন হবে তখন অবশ্যই https://bdris.gov.bd/br/application এই লিংক ব্যবহার করার মাধ্যমে আবেদন করার পেইজে চলে যেতে পারবেন। তাছাড়া যদি গুগল ক্রোম ব্রাউজারে আপনারা গিয়ে বার্থ সার্টিফিকেট এপ্লিকেশন লিখে সার্চ করেন তাহলে উপরের উল্লেখিত লিংক চলে আসবে এবং সেখান থেকে আপনারা সরাসরি আবেদন করার পেজে চলে যেতে পারবেন। আবেদন করার পেজে যেতে পারলে আপনাদেরকে সেখানে ধাপে ধাপে তথ্য পূরণ করার কথা বলবে এবং সর্বপ্রথমে যে ঠিকানার ভিত্তিতে আবেদন করতে চান সেটা পূরণ করবেন।

আবেদন দ্রুত নিষ্পত্তি করার উপায়

কারণ সেখানে বর্তমান ঠিকানার ভিত্তিতে আবেদন করার যেমন সুযোগ রয়েছে তেমনি ভাবে স্থায়ী ঠিকানার ভিত্তিতে আবেদন করার সুযোগ রয়েছে। তাছাড়া জন্মস্থানের ভিত্তিতে যদি আপনার আবেদন করতে চান তাহলে তাও করতে পারবেন। সাধারণত যারা চাকরি করেন তারা নিজেদের এলাকার বাইরে থাকেন এবং জরুরি ভিত্তিতে আপনার সন্তানের জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রয়োজন হওয়ার কারণে আপনার ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য এক জায়গায় নিবন্ধন করা হয়ে থাকলেও সন্তানের জন্ম নিবন্ধন সনদ জন্মস্থানের তথ্যের উপর নির্ভর করে আবেদন করতে পারেন। তাই আপনাদের প্রয়োজন অনুযায়ী জন্মস্থানের ঠিকানার উপরে নির্ভর করে আবেদন করতে পারেন এবং পরবর্তীতে সেটা ঠিকানা সংশোধন করে নিতে পারেন।

তবে সবচাইতে ভালো হয় আপনি যদি স্থানীয় ঠিকানার ভিত্তিতে আবেদন করতে পারেন এবং এর মাধ্যমে আপনাকে পরবর্তীতে কোন ধরনের তথ্য সংশোধন অথবা জায়গা পরিবর্তনের জন্য আবেদন করতে হবে না। তবে যাই হোক আপনার জন্মস্থানের অথবা যে ঠিকানার ভিত্তিতে আবেদন করতে চান সেটা সর্বপ্রথমে উল্লেখ করবেন এবং কেউ যদি বিদেশে থেকে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে চান তাহলেও আপনাদেরকে এমব্যাসির মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। তাই আবেদন করার প্রথম ধাপে আপনারা এই তথ্য নিশ্চিত করুন এবং পরবর্তী ধাপে গিয়ে আপনার অথবা যার জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরি করবেন তার তথ্যগুলো পূরণ করা শুরু করুন। প্রথমত আপনার সেখানে নামের তথ্য পূরণ করা লাগবে।
bdris.gov.bd

আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদের তথ্যগুলো পূরণ করার ক্ষেত্রে সর্ব প্রথমে যখন নাম প্রদান করবেন তখন এমন ভাবে নাম প্রদান করতে হবে যার টিকা কার্ডের সঙ্গে মিলে যায় অথবা সংশোধনের প্রয়োজন না থাকে। তাই বাংলাতে নামের প্রথম অংশ এবং শেষ অংশ যেমন পূরণ করবেন তেমনিভাবে ইংরেজিতেও একই নিয়ম অনুসরণ করে সঠিক করে নামের অংশগুলো বসিয়ে দিন। তবে নামের প্রথম অংশ যদি বসাতে না চান তাহলে আপনারা নামের শেষের অংশ বসাবেন এবং তথ্য নিবন্ধন করার ক্ষেত্রে অবশ্যই লাল স্টার চিহ্ন প্রদান করা আছে এমন সকল ঘরের তথ্য পূরণ করবেন। কারণ লাল স্টার চিহ্ন প্রদান করা ঘরের তথ্য প্রদান করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

যে কৌশল অবলম্বন করতে পারেন

এরপরে জন্ম নিবন্ধনকারী ব্যক্তির বেসিক কিছু তথ্য প্রদান করতে হবে এবং তিনি কোন ধর্মের অনুসারী এবং তার জাতীয়তা কি এগুলো উল্লেখ করতে হবে। তারপরে তার লিঙ্গ উল্লেখ করতে হবে এবং অন্যান্য আরো যে সকল তথ্য যাওয়া হয়েছে সেগুলো দিয়ে দিতে হবে। পিতা মাতার অথবা পরিবারের কততম সন্তান সেটা আপনারা উল্লেখ করবেন। এরপরে আপনাদের উল্লেখযোগ্য একটা তথ্য প্রদান করতে হবে এবং সেটি হল জন্ম তারিখের তথ্য। সেই শিশুটি যেখানে জন্মগ্রহণ করে থাকুক না কেন আপনারা টিকা কার্ড সংগ্রহ করবেন এবং একজন স্বাস্থ্য কর্মীর মাধ্যমে শিশুটি কত তারিখে জন্মগ্রহণ করেছে সেটা নিশ্চিত করতে হবে।

তাহলে সেই জন্ম তারিখের উপর ভিত্তি করে আপনারা নির্দিষ্ট জন্মতারিখ বসিয়ে দিতে পারবেন অথবা রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের প্রত্যয়ন পত্রের তথ্যের উপর ভিত্তি করেও আপনারা এই কাজগুলো করতে পারবেন। আপনার যখন জন্ম তারিখ প্রদান করতে বলা হবে তখন ক্যালেন্ডারের মাধ্যমে সেটা প্রদান করতে গেলে বেশ কিছু কাগজপত্র রয়েছে কিনা এবং তার ভিত্তিতে আবেদন করছেন কিনা সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। তারপরে আপনারা যে ঠিকানার ভিত্তিতে আবেদন করতে চান সেটা ধাপে ধাপে পূরণ করবেন এবং হোল্ডিং নাম্বার না থেকে থাকলেও আপনারা গ্রামের নাম প্রদান করবেন। প্রথম পেজের কাজ সম্পন্ন করার পরে পরবর্তী পেজে গেলে পিতা মাতার তথ্য প্রদান করার কথা বলা হবে। এক্ষেত্রে পিতা-মাতার জন্ম নিবন্ধন সনদের নাম্বার এবং জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম্বার প্রদান করলেই অটোমেটিক সেখানে তাদের নাম চলে আসবে এবং তাদের পেশা উল্লেখ করবেন।

যে বিষয়গুলো মাথায় রাখবেন

এখন আপনাকে পরবর্তী ধাপে যেতে হবে এবং সেখানে গিয়ে আপনাকে আবেদনকারীর তথ্য নিশ্চিত করতে হবে। অর্থাৎ আবেদনকারী নিজে আবেদন করছে নাকি তার পিতা-মাতা করছে অথবা পরিবারের সদস্য করছে কিনা এ বিষয়গুলো আপনাদেরকে নিশ্চিত করতে হবে। তাই জন্ম নিবন্ধন সনদের এই তথ্যগুলো পূরণ করার পর আবেদনকারীর একটা যোগাযোগের নাম্বার অথবা ইমেইল এড্রেস থাকলে সেটা প্রদান করবেন। এরপরে নিচে গিয়ে আপনারা প্রমাণপত্র হিসেবে কোন কোন কাগজপত্র সাবমিট করতে চাইছেন অথবা কোন গুলো সাবমিট করার কথা বলা হয়েছে সেগুলো নির্বাচন করবেন।

উল্লেখিত কাগজপত্র নির্বাচন করতে পারলে সাইডে আপলোড অপশন চলে আসবে। আপলোড অপশনে গিয়ে আপনারা টিকা কার্ড এর মূল কপি নির্দিষ্ট রেজুলেশনের ভেতরে আপলোড করবেন। সেই সাথে শিশুটি যে স্থানে বসবাস করছে সেই স্থানের বসবাসরত কাজ না পরিশোধের রশিদ অথবা জমি খারিজের রশিদ আপলোড করতে হবে। এভাবে প্রত্যেকটি তথ্য আপনারা পূরণ করা হয়ে গেলে আবেদনের যে সামারি দেখাবে সেখান থেকে আপনারা রিভাইস দিয়ে দেখে নিবেন কোন ধরনের ভুল ভ্রান্তি আছে কিনা। যদি ভুলভ্রান্তি না থেকে থাকে তাহলে সরাসরি আবেদনপত্র সাবমিট করে দিবেন এবং সেটার পিডিএফ ফাইল আকারে ডাউনলোড করার সুযোগ রয়েছে বলে সেটা ডাউনলোড করবেন। তারপরে উল্লেখিত কাগজপত্র নিয়ে আপনারা সরাসরি স্থানীয় সরকার বিভাগের কাছে জমা দিলেই তারা আপনাদেরকে জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরি করে দেবে এবং সেটা অনলাইনে সংরক্ষণ হয়ে থাকবে।

bdris.gov.bd