নতুন জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন কিভাবে করবেন

নতুন জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন কিভাবে করবেন

পরিবারের কোনো শিশু সন্তান যদি জন্মগ্রহণ করে থাকেন এবং আপনারা যদি অভিভাবক হিসেবে তাদের নতুন জন্ম নিবন্ধন তৈরি করে যেতে চান তাহলে অবশ্যই অনলাইনে মাধ্যমে আবেদন করবেন। হাতে লিখে আবেদন ফরম পূরণ করে স্থানীয় সরকারের কাছে প্রদান করার পরিবর্তে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদনের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে বলে আপনাদেরকে অনলাইনেই করতে হবে। তাই নতুন জন্ম নিবন্ধন সনদ যারা তৈরি করবেন তাদেরকে অবশ্যই আজকের এই পোস্ট পড়লে অনেক তথ্য জানতে পারবেন।

নতুন জন্ম নিবন্ধন সনদের আবেদন করার ক্ষেত্রে আপনাদের উদ্দেশ্যে আমরা এ বিষয়গুলো উপস্থাপন করছি বলে আপনারা জানতে পারছেন এবং এ বিষয়ের ভিত্তিতে আবেদন করলে ভালো কাজ করবেন। যেহেতু জন্ম নিবন্ধন সনদ আজীবনের জন্য একটা পরিচয় পত্র হিসেবে কাজ করবে সেহেতু এখানে পিতা-মাতার তথ্যগত যেমন সঠিকতা অবলম্বন করতে হবে তেমনি ভাবে সকল ক্ষেত্রে আমরা সঠিক তথ্য প্রদান করার চেষ্টা করব। তাই অনলাইনের মাধ্যমে কোন ওয়েবসাইটে গিয়ে কি কি তথ্য প্রদান করার মাধ্যমে নতুন জন্ম নিবন্ধন সনদের আবেদন করা যায় তা জানিয়ে দেওয়া হলো।

নতুন জন্ম নিবন্ধন আবেদন

নতুন করে জন্ম নিবন্ধন সনদের আবেদন করতে চাইলে আপনাদেরকে এখন আমরা বিডিআরআইএস এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ভিজিট করতে বলবো। এই অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে আপনাদেরকে নতুন তথ্য নিবন্ধনের জন্য আবেদন অপশনে যেতে হবে। তবে আবেদন করার পেজ খুব সহজেই খুঁজে পেতে চাইলে অবশ্যই আপনাদেরকে বার্থ সার্টিফিকেট এপ্লিকেশন লিখে সার্চ করতে হবে।

ইংরেজিতে আপনারা এই তথ্যটি লিখে সার্চ করলে খুব ভালো হবে। তারপরও যারা সরাসরি লিংক ব্যবহার করার মাধ্যমে অফিশিয়াল ওয়েবসাইটের পেইজে যেতে যাচ্ছেন এবং সরাসরি আবেদন করার কার্যক্রম শুরু করতে চাচ্ছেন তারা অবশ্যই https://bdris.gov.bd/br/application এই লিংক ব্যবহার করার মাধ্যমে অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে যাবেন। তাহলে খুব সহজেই জন্ম নিবন্ধন সনদের আবেদন করতে পারবেন।

তাই অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের আবেদন করার পেজে যখন যেতে পারবেন তখন কোন ঠিকানার ভিত্তিতে আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদের আবেদন করবেন সেটা সর্বপ্রথমে নির্বাচন করতে হবে। যদি সম্ভব হয় তাহলে স্থায়ী ঠিকানার ভিত্তিতে আবেদন করবেন। তবে জরুরী ভিত্তিতে আপনারা যদি জন্মস্থানের উপর নির্ভর করে আবেদন করেন তাহলে সেটা করা যাবে এবং পরবর্তীতে আপনাদের প্রয়োজন হলে স্থানীয় ঠিকানার ভিত্তিতে এটা তৈরি করে নেওয়া যাবে। আর যদি কোন শিশু বিদেশে থাকা অবস্থায় এই জন্ম নিবন্ধন সনদের আবেদন করার জন্য তার অভিভাবক কাজ করে থাকে তাহলে অবশ্যই দূতাবাসের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে।

যেভাবে নিবন্ধনের আবেদন

তবে নির্দিষ্ট একটা ঠিকানা নির্বাচন করার পরে আপনাদেরকে পরবর্তী পেজে গেলে নিবন্ধনকারী ব্যক্তির তথ্য ইনপুট করতে বলবে। অর্থাৎ আপনারা এখানে যার জন্য জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরি করবেন তার তথ্যগুলো প্রদান করা শুরু করবেন। অনলাইনের মাধ্যমে আবেদনপত্র পূরণ করার ক্ষেত্রে লাল স্টার চিহ্ন প্রদান করা আছে এমন প্রতিটা ঘরের তথ্য প্রদান করা বাধ্যতামূলক। তাই আপনারা যখন তথ্য পূরণ করবেন তখন অবশ্যই নামের প্রথম অংশ প্রদান না করলেও নামের শেষের অংশ বাংলায় প্রদান করতে হবে। ইংরেজি নাম প্রদান করার ক্ষেত্রেও একই নিয়ম অনুসরণ করতে হবে। এরপরে আপনাদেরকে নিচের দিকে গিয়ে আপনার জন্ম তারিখ উল্লেখ করতে হবে এবং ক্যালেন্ডারের মাধ্যমে যখনই আপনারা জন্ম তারিখ উল্লেখ করতে যাবেন তখন আপনাদের সামনে বেশ কিছু কাগজপত্রের হিসাব চাওয়া হবে।

অর্থাৎ মেডিকেল থেকে আপনারা যদি প্রথম পত্র গ্রহণ করতে পারেন তাহলে সেটা সবচাইতে ভালো হবে অথবা টিকা কার্ডের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন। এছাড়াও আপনারা যখন আবেদন করবেন তখন আপনাদের জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট যদি থেকে থাকে তাহলে সেটা দিয়ে আবেদন করা যাবে অথবা অন্যান্য ডকুমেন্টস এর ভিত্তিতে আবেদন করা যাবে। আপনারা যে স্থানীয় ঠিকানায় বসবাস করছেন সেই ঠিকানার খাজনা পরিশোধের রশিদ অথবা জমি খারিজের রশিদ ওয়েবসাইটে আপলোড করতে হবে। তাই অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করার ক্ষেত্রে আপনারা এই সকল কাগজপত্র আগে থেকে রেডি করে রাখবেন এবং প্রয়োজনীয় মুহূর্তে আপলোড করে দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট রেজুলেশন বা ফরমেটে এগুলো তৈরি করে রাখবেন।
bdris.gov.bd

তথ্যগুলো সঠিকভাবে পূরণ করুন

এরপরে আপনি পরিবারের পিতা মাতার কততম সন্তান এটা উল্লেখ করতে হবে এবং আপনার অন্যান্য তথ্য প্রদান করতে হবে। তারপরে আপনারা যে ঠিকানার ভিত্তিতে এখানে আবেদন করতে এসেছেন সেই ঠিকানার তথ্যগুলো ধাপে ধাপে পূরণ করতে হবে। আপনাদের বিভাগের নাম থেকে শুরু করে স্থানীয় পর্যায়ের তথ্য এমনকি হোল্ডিং নাম্বার প্রদান করতে হবে। এখন হোল্ডিং নাম্বার যদি সংগ্রহে না থেকে থাকে তাহলে গ্রামের নাম ব্যবহার করতে পারবেন। তারপরে আপনাদেরকে পরবর্তী পেজে যেতে হবে এবং সেখানে আপনার পিতা মাতার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গুলো উপস্থাপন করতে হবে।

অর্থাৎ পিতা মাতার তথ্য বলতে তাদের জন্ম নিবন্ধন সনদের নাম্বার উল্লেখ করতে হবে। বর্তমানের নিয়ম অনুযায়ী পিতামাতার জন্ম নিবন্ধন সনদ ব্যতীত সন্তানের জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরি করা যাবেনা এমন সিস্টেম চালু করা হয়েছে। তাই আপনি যখন পিতা-মাতার এই জন্ম নিবন্ধন সনদ আগে থেকেই সংগ্রহ করে রাখতে পারবেন তখন অবশ্যই তাদের জন্ম নিবন্ধন সনদের নাম্বার প্রদান করবেন। পিতার জন্ম নিবন্ধন সনদের নাম্বার প্রদান করার পর তাদের নাম এবং তারা কি পেশার সঙ্গে জড়িত রয়েছেন তা উল্লেখ করবেন। এরপরে আপনাদেরকে আরো কিছু তথ্য প্রদান করা লাগবে এবং পিতার ক্ষেত্রে যে সকল তথ্য প্রদান করেছেন ঠিক একই তথ্য মাতার ক্ষেত্রে প্রদান করা লাগবে।

এরপরে আপনাদেরকে আবার পরবর্তী ধাপে যেতে হবে এবং সেখানে গিয়ে আপনারা যে ঠিকানার ভিত্তিতে আবেদন করতে চাইছিলেন সেটা আপনার স্থায়ী ঠিকানা কিনা তা উল্লেখ করবেন। যদি সেটা বর্তমান ঠিকানা অথবা জন্মস্থানের ঠিকানার ভিত্তিতে আবেদন করা হয়ে থাকে তাহলে স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে আপনারা আরো একবার ঠিকানা প্রদান করবেন। এক্ষেত্রেও বিভাগ থেকে শুরু করে বাসার হোল্ডিং নাম্বার পর্যন্ত আপনাদেরকে নির্ভুলভাবে প্রদান করতে হবে। তারপরে পরবর্তী পেজে গেলে আবেদনকারীর তথ্য প্রদান করতে হবে। আবেদনকারীর বয়স যদি ১৮ এর নিচে হয়ে থাকে তাহলে সেখানে অন্যান্য অপশনটি নির্বাচন করতে হবে। কিন্তু ১৮ বছর বয়স অতিক্রম করার পরেও যদি জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরি হয়ে না থাকে তাহলে আবেদনকারী নিজে আবেদন করছে বলে উল্লেখ করতে হবে।

জন্ম নিবন্ধন এর জন্য যত টাকার প্রয়োজন

এভাবে আপনারা ধাপে ধাপে জন্ম নিবন্ধন সনদের এই তথ্যগুলো পূরণ করবেন এবং আবেদনকারীর বিস্তারিত তথ্য ও মোবাইল নাম্বার দিলে ফোনে একটা অ্যাপ্লিকেশন আইডির এসএমএস আসবে। আপনারা যখন আবেদনকারী তথ্যগুলো পূরণ করে ফেললেন তখন নিচের দিকে গিয়ে আপলোড অপশনে যেতে হবে। আপনাদেরকে উপরের দিকে যে সকল কাগজপত্রের কথা বলা হলো সেগুলো নির্দিষ্ট ফরমেটে ওয়েব সাইটে আপলোড করতে হবে। আপলোড সম্পন্ন হয়ে গেলে এবং আবেদনকারীর বয়স যদি পাঁচ বছরের অধিক হয়ে থাকে তাহলে নির্দিষ্ট পরিমাণ আবেদন ফিস প্রদান করতে হবে। এক্ষেত্রে সরাসরি গিয়ে অফিসে টাকা প্রদান করাটাই ভালো হবে এবং ফি আদায় অপশন নির্বাচন করলে আপনারা সরাসরি অফিসে টাকা জমা দেওয়ার অধিকার রাখবেন।

আপনার পুরো আবেদন যদি কোন ধরনের ভুল না থাকে তাহলে আর দেরি না করে সেটা সাবমিট করে দিবেন।মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আবেদনপত্র পূরণ করে থাকলে সেটা ডাউনলোড করে রাখবেন এবং পিডিএফ ফাইল আকারে পরবর্তীতে প্রিন্ট দিয়ে নিয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের কাছে জমা দিতে পারবেন। আবেদন সাবমিট করার ১৫ দিনের ভেতরে যদি আপনারা স্থানীয় সরকার বিভাগের কাছে এটা জমা না দেন তাহলে আপনার আবেদন বাতিল হয়ে যাবে। তাই আবেদন পত্র এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও আবেদন ফিস প্রদান করার মাধ্যমে তাদের কাছে জমা দিলেই পরবর্তীতে আপনাদের আবেদন অনুযায়ী অরিজিনাল জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রদান করবে।

bdris.gov.bd