জন্ম নিবন্ধন তথ্য সংশোধনের জন্য অনলাইন আবেদন নতুন আপডেট

সাধারণত আপনার হাতে যদি জন্ম নিবন্ধন সনদ থেকে থাকে তাহলে একজন ব্যক্তির নাম এবং ঠিকানার তথ্য থাকবে। এছাড়াও তার পিতা মাতার নাম এবং নির্দিষ্ট এলাকার তথ্য সেখানে উল্লেখ করা থাকবে। তাই কোন ব্যক্তির ব্যক্তিগত পরিচয় পত্র হিসেবে এটা ব্যবহার করা যায় বলে অবশ্যই আমাদেরকে এখানে তথ্যগত বিষয়ে সচেতন ভূমিকা পালন করতে হবে। অর্থাৎ এখানে তথ্যের কোন ভুল থাকা যাবে না এবং তথ্যগত ভুল থেকে থাকলে অবশ্যই সেটা সঠিক করে নিতে হবে।

তাই আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদের ভিত্তিতে যদি মাধ্যমিক পরীক্ষার সার্টিফিকেট তৈরি হয়ে থাকে অথবা জন্ম নিবন্ধন সনদের ভিত্তিতে যদি এনআইডি কার্ড তথ্য নিবন্ধন করে থাকেন তাহলে সেখানেও ভুল তথ্য লিপিবদ্ধ হবে। তাই সকল তথ্যের সত্যতা ও বৈধতা যাচাই করার মাধ্যমে অনলাইনের মাধ্যমে তথ্য আবেদন করার সময় অবশ্যই আমাদেরকে এগুলো সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে। তবে আপনার হাতে জন্ম নিবন্ধন সনদের যদি অরিজিনাল ডকুমেন্টস এ ভুল পরিলক্ষিত হয় তাহলে দেরি না করে অবশ্যই তথ্য সংশোধন করার জন্য অনলাইন আবেদন করতে পারেন।

জন্ম নিবন্ধন সংশোধন

সাধারণত জন্ম নিবন্ধন সনদের অনলাইন আবেদনের ক্ষেত্রে ১৫ থেকে ২০ দিনের মতো সময় গ্রহণ করা হয়। অর্থাৎ আপনার যে সকল তথ্যের ভুল রয়েছে সে সকল ভুলের পেছনে যদি প্রয়োজনীয় যুক্তি বা প্রমাণপত্র স্থাপন করতে পারেন তাহলে সেটার ভিত্তিতে তথ্য সংশোধন হয়ে যাবে। তাই তথ্য সংশোধন করার জন্য অবশ্যই আপনারা সঠিক নিয়ম অনুসরণ করবেন এবং তথ্য সংশোধন করার জন্য আপনাদের বেশ কিছু কাগজপত্রের প্রয়োজন হবে। কোথায় গিয়ে কিভাবে জন্ম নিবন্ধন সনদের তথ্য অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করা যায় অথবা কিভাবে তথ্য সংশোধনের আবেদন করে সেটা স্থানীয় সরকার বিভাগের কাছে জমা দিতে হয় তাই এই পোস্টে আমরা আপনাদেরকে জানিয়ে দেব।

তাই আপনার জন্ম নিবন্ধন সংক্রান্ত কোনো ধরনের সমস্যা থেকে থাকলে তা দেরি করে এগুলো যথাসময়ে মধ্যে সম্পন্ন করে রাখুন। জন্ম নিবন্ধন সনদের তথ্য সংশোধন করার জন্য আমরা আপনাদের সামনে যে বিষয়গুলো উপস্থাপন করব সেগুলো যদি আপনারা খুব সহজে বুঝতে পারেন অথবা নির্দিষ্ট নিয়ম অনুসরণ করেন তাহলে ধাপে ধাপে প্রত্যেকটি কাজ সম্পন্ন করা যাবে। বর্তমানে হাতে লিখে জন্ম নিবন্ধন সনদের তথ্য সংশোধনের আবেদন ফরম পূরণ করার সুযোগ নেই এবং অনলাইনের মাধ্যমে আপনাদেরকে এই আবেদন করতে হবে। তাই আবেদন করার জন্য বিডিআরআইএস এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে যেতে হবে এবং সেখানে গিয়ে আপনাদের তথ্যগুলো সঠিকভাবে পূরণ করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সাবমিট করতে হবে।

জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করতে হলে যা কিছু করতে হবে

যদি অনলাইনের মাধ্যমে জন্ম নিবন্ধন সনদের তথ্য সংশোধনের নিয়ম জানতে চান তাহলে সর্বপ্রথমে আমরা আপনাদেরকে https://bdris.gov.bd/br/correction এই লিংক ব্যবহার করার মাধ্যমে অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে যেতে বলব। এখানে যেতে পারলে আপনারা যাবতীয় কাজ করতে পারবেন এবং এই লিংক ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনারা আবেদন করার সরাসরি বেজে চলে যেতে পারবেন। তাই আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদের তথ্য সংশোধন করার জন্য সর্বপ্রথমে আপনাকে এখানকার যে বার্থ রেজিস্ট্রেশন নাম্বার রয়েছে সেটা ইনপুট করতে হবে। তারপরে আমরা আপনাদেরকে জন্ম নিবন্ধন সনদের তথ্য অনুযায়ী যে জন্ম তারিখ প্রদান করা আছে সেটা দিয়ে দিতে বলব। এই দুটি তথ্য সঠিকভাবে দিয়ে দেওয়ার পর সার্চ করলেই আপনার নাম সেখানে দেখানো হবে।

যদি সেই নামটি আপনাদের হয়ে থাকে তাহলে দেরি না করে কনফার্ম করতে হবে। তাহলে পরবর্তী পেজে চলে যেতে পারবেন এবং সেখানে গিয়ে তথ্য সংশোধন করার জন্য যা যা হবে সেগুলো প্রদান করবেন। প্রথমে আপনাদের এমন একটা ঠিকানা প্রদান করতে হবে যেটার মাধ্যমে আপনারা নির্দিষ্ট অফিসে গিয়ে এটা প্রদান করতে পারবেন এবং সংশোধিত জন্ম নিবন্ধন সংগ্রহ করতে পারবেন। ঠিকানা প্রদান করার ক্ষেত্রে নিজেদের বিভাগের নাম থেকে শুরু করে স্থানীয় পর্যায়ে তথ্য প্রদান করবেন এবং বাসার হোল্ডিং নাম্বার প্রদান করবেন। অর্থাৎ লাল স্টার চিহ্ন প্রদান করা আছে এমন প্রত্যেকটি ঘরের তথ্য প্রদান করা বাধ্যতামূলক বলে এগুলো আপনারা স্কিপ করতে পারবেন না।

এখন আপনারা যদি পরবর্তী পেজে যেতে চান তাহলে আপনাদের পিতা মাতার তথ্য চাওয়া হবে। এক্ষেত্রে আপনারা যখন আবেদন করার প্রথম পেজে যেতে পেরেছিলেন তখন সেখানে পিতা-মাতার নাম সংশোধনের ক্ষেত্রে তাদেরও জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করে আসতে হবে এমন দিকনির্দেশনা প্রদান করা ছিল। তাই তথ্য সংশোধনের ক্ষেত্রে যদি পিতা মাতার তথ্য সংশোধন করার প্রয়োজন হয় তাহলে আপনারা অবশ্যই তাদের জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করার প্রয়োজন হলে প্রথমে তাদের গুলো অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করে সংশোধন করে নিবেন। এবার আপনারা যখন জন্ম নিবন্ধন সনদের আসল তথ্যগুলো সংশোধন করতে চাইবেন তখন সেই পেজ চলে আসবে এবং সেখানে আপনাদেরকে কোন তথ্য সংশোধন করার প্রয়োজন রয়েছে তা অপশনের মাধ্যমে নির্বাচন করতে হবে।
bdris.gov.bd

জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের ধাপসমূহ

তারপরে ভুল তথ্য হিসেবে কি আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদে প্রদান করা আছে সেটা উল্লেখ করতে হবে এবং তার সংশোধিত তথ্য হিসেবে কি প্রদান করা লাগবে সেটাও প্রদান করবেন। এভাবে আপনারা তথ্যগুলো সংশোধন করার কাজ করবেন এবং আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী এক বা একাধিক তথ্য সংশোধন করার সুবিধা রয়েছে। তবে তথ্য নিবন্ধনের সময় ভুল তথ্য নিবন্ধন করা হয়েছিল এমন একটা কারণ আপনাদেরকে দেখাতে হবে। এভাবে আপনারা তথ্য সংশোধনের কাজগুলো করে দিতে পারেন এবং আগের ভুল তথ্য লিখে দেওয়ার পাশাপাশি সঠিক তথ্য উপস্থাপন করতে হবে।

তবে সেখানে যদি আপনাদের একাধিক তথ্য সংশোধন করার প্রয়োজন হয় তাহলে “আরও তথ্য সংযোজন করুন” অপশনে চলে যেতে হবে। তাহলে আপনারা একাধিক তথ্য সংশোধন করার সেখান থেকে সুযোগ পাবেন। এরপরে আবেদনকারীর তথ্য প্রদান করতে হবে এবং আবেদনকারী আপনি নিজে হয়ে থাকলে নিজ অপশন নির্বাচন করবেন। আর যদি অন্য কেউ হয়ে থাকে তাহলে অন্যান্য অপশন অথবা পরিবারের সদস্য হয়ে থাকলে সেই সদস্যের সম্পর্কের উল্লেখ করতে হবে। তাছাড়া যিনি আবেদন করছেন তার মোবাইল নাম্বার এবং ইমেইল এড্রেস যেখানে প্রদান করা লাগবে। তবে মোবাইল নাম্বার বাধ্যতামূলক হওয়ার কারণে আপনি যে আবেদন করছেন সেই আবেদনের একটা নির্দিষ্ট নাম্বার আপনার মোবাইল ফোনে পাঠানো হবে। পরবর্তীতে আপনি আবেদনের বর্তমান অবস্থা যাচাই করে নিতে পারবেন এবং এই অ্যাপ্লিকেশন আইডি নাম্বার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা এক্ষেত্রে পালন করেন।

এরপরে আপনাদের যে জন্ম নিবন্ধন সনদের তথ্য সংশোধন করলেন এটা আসলে কোন তথ্যের ভিত্তিতে সংশোধন করছেন অথবা এর ক্ষেত্রে প্রমাণ কি কাজ করবে তা উপস্থাপন করতে হবে। সেখানে যথাযথ কাগজপত্র সর্বপ্রথমে অপশন এর মাধ্যমে সিলেক্ট করতে হবে। সমস্যা অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের কাগজপত্র আপডেট করার অপশন রয়েছে বলে আপনারা নির্দিষ্ট কাগজপত্র আপলোড করার অপশন নির্বাচন করবেন। এর পরে আপনাদেরকে ডানদিকে যে আপলোড অপশন আসবে সেখানে কাগজপত্র আপলোড করে দিতে হবে। তারপরে ২০০ কিলোবাইট এর মধ্যে এ সকল কাগজপত্র সাবমিট করতে হবে। কাগজপত্র সাবমিট করে দেওয়ার পর আবেদন ফি পেমেন্ট করতে হবে।

এক নজরে যা কিছু শিখলাম

যেহেতু আপনি অনলাইনের মাধ্যমে এ কাজগুলো করছেন এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের কাছে গিয়ে টাকা জমা দেবেন সেহেতু আপনারা “ফি আদায়” অপশনটি নির্বাচন করে রাখতে পারেন। কেউ যদি চালান ফার্মের মাধ্যমে অনলাইন পেমেন্ট করতে চায় তাহলে তা পারবে। এভাবে আপনার আবেদন সাবমিট করে দিয়ে সেটা পিডিএফ ফাইল আকারে ডাউনলোড করবেন এবং সফলভাবে আবেদন সাবমিট হয়ে গেলে সেটা পিডিএফ ফাইল আকারে ডাউনলোড করার ব্যবস্থা করা হবে। যে সকল কাগজপত্র আপনারা ওয়েবসাইটে সাবমিট করলেন সেই একই কাগজপত্রের ফটোকপি এবং আবেদন পত্র প্রিন্ট আউট করে নিয়ে আপনার স্থানীয় সরকার বিভাগের কাছে জমা দিবেন। তাছাড়া তাদেরকে সরাসরি পেমেন্ট প্রদান করার মাধ্যমে অপেক্ষা করতে হবে এবং আপনার আবেদন সংশোধন হয়ে গেলে সেটা খোঁজ নিয়ে জেনে নিতে পারবেন।