জন্ম নিবন্ধন করার নিয়ম | অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন

জন্ম নিবন্ধন করার নিয়ম | অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন

জন্ম নিবন্ধন করতে হলে আপনাকে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। তাই এখন পর্যন্ত যাদের জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরি করা হয়নি তারা অবশ্যই এগুলো তৈরি করে নেওয়ার জন্য আমাদের ওয়েবসাইটের প্রদান করার প্রত্যেকটি তথ্য অনুসরণ করবেন। কারো জন্ম নিবন্ধন এর আবেদন প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে আবেদন সম্পন্ন করার পর আপনাদের আরো কিছু কাজ করতে হবে। তবে কি কাজ করতে হবে এবং কোথায় গিয়ে কোন কোন কাগজপত্রের ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে তা জানতে হলে এই পোস্ট পড়তে হবে।

আমরা এই পোস্টের মাধ্যমে আপনাদেরকে জন্ম নিবন্ধন সনদ কিভাবে তৈরি করতে হয় সে বিষয়ে সম্পর্কে জানিয়ে দিলে অনেকেই এগুলো নিবন্ধন করার জন্য সঠিক পন্থা অনুসরণ করতে পারবেন। যেহেতু জন্ম নিবন্ধন ব্যতীত কোন শিক্ষার্থীর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি নিশ্চিত হতে পারেনা অথবা বিভিন্ন ক্ষেত্রে এটার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম বলে মনে করে থাকে সেহেতু আপনারা অবশ্যই এটাকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবেন। তাই এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা জন্ম নিবন্ধনের আবেদন থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি ধাপ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিন।

জন্ম নিবন্ধন সনদ কোথায় থেকে তৈরি করতে হয়

এর আগে আমরা যখন জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরি করতাম তখন স্থানীয় সরকার বিভাগ অথবা ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে আমাদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রদান করলেই তারা এগুলো তৈরি করে দিত। সে ক্ষেত্রে হয়তো তোমাদের ভোটার আইডি কার্ড লাগতো এবং আমাদের বেশ কিছু তথ্য প্রদান করতে হতো। কিন্তু বর্তমান সময়ে সেই তথ্য প্রদান করার কারণে বিভিন্ন ধরনের সংশোধনী মূলক আবেদন করা হচ্ছে এবং আপনার সংশোধন যাতে না করতে হয় তার জন্য এখন থেকেই আবেদনের সময় আপনাকে সঠিক ভূমিকা পালন করতে হবে। তাই আপনি যখন জন্ম নিবন্ধন সনদের সঠিক আবেদন করতে চাইবেন তখন অবশ্যই আপনাকে এটা নিবন্ধন করার জন্য বেশ কিছু নিয়ম শিখিয়ে দেওয়া হবে।

তাই আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদ সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ করার জন্য অথবা নতুন আবেদন করার জন্য অথবা জন্ম নিবন্ধনের তৈরি করার জন্য
https://bdris.gov.bd/br/application এই লিংক ব্যবহার করতে বলবো। কারণ এই লিংক ব্যবহার করার মাধ্যমে সরাসরি আপনারা আবেদন করার অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে যেতে পারবেন এবং নির্দিষ্ট পেজে গিয়ে আবেদন করার প্রক্রিয়াগুলো অনুসরণ করতে পারবেন। এখানে গেলে আপনারা জন্ম নিবন্ধন সনদের আবেদন করার জন্য সর্বপ্রথমে আপনাদেরকে কোন ঠিকানার ভিত্তিতে আবেদন করতে চান তা নির্বাচন করতে হবে। স্থায়ী ঠিকানা এক হয়ে থাকলেও অনেক সময় আপনাদের প্রয়োজনে আপনার যখন বাইরে বসবাস করেন অথবা জন্মস্থানের ঠিকানার ভিত্তিতে আবেদন করতে চান তাহলে তা করতে পারেন।

কিভাবে জন্ম নিবন্ধন করতে হয়

তবে যে ঠিকানার ভিত্তিতে আবেদন করে থাকুন না কেন আপনাদেরকে স্থায়ী ঠিকানা প্রদান করতে হবে এবং বর্তমান ঠিকানা প্রদান করতে হবে। তাই আপনাদের সুবিধা অনুযায়ী যে অফিস থেকে আপনারা জন্ম নিবন্ধন সনদ সংগ্রহ করবেন সে অফিসের নাম দিয়ে দিবেন। অর্থাৎ কোন ঠিকানার ভিত্তিতে জন্ম নিবন্ধনের আবেদন করছেন সেটা প্রদান করলে আপনারা সেই অফিস থেকে জন্ম নিবন্ধন সনদের অরিজিনাল ডকুমেন্টস সংগ্রহ করতে পারবেন। আর যদি কেউ দেশের বাইরে থাকে তাহলে দূতাবাসের মাধ্যমেও আবেদন করার সুযোগ থাকছে। তাই প্রথম ধাপ সম্পন্ন করার পর পরবর্তী ধাপে যেতে পারলে আপনাদেরকে সেখানে জন্ম নিবন্ধনকারী ব্যক্তির নামের তথ্য থেকে শুরু করে বিস্তারিত তথ্য প্রদান করা লাগবে।

এখন যার জন্য জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরি করবেন তার নাম দেওয়া লাগবে। তবে লাল স্টার চিহ্ন প্রদান করা রয়েছে এমন তথ্যগুলো প্রদান করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে বলে এগুলো আপনারা স্কিপ করতে পারবেন না। তাই প্রত্যেকটি তথ্যের সঠিকতা অবলম্বন করবেন এবং কোথাও যেন কোন তথ্য ভুল না হয় সেগুলো আপনারা আগে থেকে জেনে নিয়ে সঠিক তথ্য প্রদান করবেন। জন্ম নিবন্ধনকারী ব্যক্তির নামের প্রথম অংশ এবং শেষ অংশ বাংলায় যেভাবে প্রদান করবেন ঠিক একই নিয়ম অনুসরণ করে আপনাদেরকে ইংরেজিতে প্রদান করতে হবে। তাই আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদ সংক্রান্ত এই কাজগুলো করার জন্য সেখানে প্রত্যেকটি তথ্য সঠিকভাবে প্রদান করুন।
bdris.gov.bd

আপনার যখন জন্ম নিবন্ধন সনদের তথ্যগুলো প্রদান করা হবে তখন জন্ম তারিখ প্রদান করতে হবে এবং জন্ম তারিখ প্রদান করার সময় আপনাদেরকে বেশ কিছু ডকুমেন্টস এর নাম উল্লেখ করা হবে। এই সকল ডকুমেন্টস যদি আপনাদের সঙ্গে থেকে থাকে অথবা তার পরিবর্তে যদি সেখানে অন্যান্য যে অপশন দিয়েছে সেগুলো যদি থেকে থাকে তাহলে আপনারা আবেদন করার পরবর্তী ধাপগুলো অনুসরণ করবেন। এছাড়াও ব্যক্তিগত তথ্যের জায়গায় আপনারা পরিবারের কততম সন্তান সেটা উল্লেখ করবেন। আপনার যদি সেখানে আরও তথ্য প্রদান করার কথা বলে তাহলে সেগুলো আপনারা নিজেরাই প্রদান করতে পারবেন বলে মনে করি। এরপরে আসবে আপনাদের ঠিকানা সংক্রান্ত তথ্য প্রদান করার ঘর।

জন্ম নিবন্ধনের যে ডকুমেন্টগুলো লাগবে

সেখান থেকে আপনাদের বিভাগের নাম নির্বাচন করবেন এবং পরবর্তীতে জেলার নাম নির্বাচন করবেন। তারপরে উপজেলার নাম নির্বাচন করে আপনি কোন স্থানীয় সরকার বিভাগের কত নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সেটা উল্লেখ করবেন। এছাড়াও আপনাদের বাসার হোল্ডিং নাম্বার প্রদান করতে হবে এবং হোল্ডিং নাম্বার না থেকে থাকলে আপনার বাড়ির মালিকের নাম দিয়ে হাউস শব্দটি উল্লেখ করতে পারেন। তারপর আপনাদেরকে পরবর্তী পেজে যেতে হবে এবং সেখানে গিয়ে আপনার পিতামাতার তথ্য প্রদান করতে হবে। বর্তমানে নিয়ম অনুযায়ী পিতা মাতার জন্ম নিবন্ধন সনদ থাকা ব্যতীত সদ্য জন্মগ্রহণ করা সন্তানের জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরি করার সুযোগ নেই। তাই পিতা মাতার জন্ম নিবন্ধন সনদ থাকতে হবে এবং তাদের জন্ম নিবন্ধন সনদের ১৭ ডিজিটের নাম্বার ওয়েবসাইটে লিপিবদ্ধ করতে হবে।

যখন এগুলো প্রদান করা হয়ে যাবে তখন পিতা মাতার এন আইডি কার্ডের নাম্বার এবং তাদের নাম ও পেশার নাম উল্লেখ করতে হবে। পিতার এবং মাতার একই ক্যাটাগরির তথ্য লাগবে বলে অবশ্যই আপনারা সঠিকভাবে প্রত্যেকটি তথ্য দিয়ে দিবেন। তথ্যগুলো দিয়ে দেওয়ার পর আপনাদেরকে পরবর্তী ধাপে যেতে হবে এবং সেখানে গিয়ে আপনার স্থানীয় ঠিকানা চাওয়া হবে। যেহেতু আপনারা জন্ম নিবন্ধন সনদ কোন অফিস থেকে সংগ্রহ করতে চান তার জন্য নির্দিষ্ট ফর্মেটে তথ্য প্রদান করেছেন ঠিক একই ফরমেটে আপনাদেরকে স্থায়ী ঠিকানা তথ্য প্রদান করতে হবে। এরপর আপনারা পরবর্তী ধাপে গেলে সেখানে আবেদনকারীর তথ্য প্রদান করা লাগবে এবং এক্ষেত্রে নিজের নাম অথবা পরিবারের অন্যান্য কোন সদস্যদের তথ্য প্রদান করতে পারেন।

জন্ম নিবন্ধন সহজে করার কৌশল

একটি সচল মোবাইলের নাম্বার প্রদান করার পাশাপাশি সেই আবেদনকারীর নাম উল্লেখ করতে হবে এবং ইমেইল এড্রেস থাকলে সেটা প্রদান করতে পারেন। আবেদনকারী তথ্যের জায়গায় যে মোবাইল নাম্বার প্রদান করলেন সেটা যেন সচল হয়ে থাকে এবং সেই নাম্বারে অ্যাপ্লিকেশন আইডির এসএমএস গেল যেন সেটা সংগ্রহ করার ব্যবস্থা থাকে সেটা আপনারা জেনে শুনে দিবেন। তারপরে আপনাদেরকে নিচে গিয়ে যে সকল কাগজপত্রের কথা পূর্বে বলা হয়েছিল সেগুলো ২০০ কিলোমিটার মধ্যে ওয়েবসাইটে আপলোড করার জন্য আগে থেকে সংরক্ষণ করে রাখতে হবে। তাই আপনারা আবেদন করার জন্য নির্দিষ্ট কাগজপত্র ওয়েবসাইটে আপলোড করুন এবং নিচে গিয়ে ফি আদায় অপশন নির্বাচন করুন।

এভাবে আপনার আবেদন পত্র পূর্ণ হয়ে গেলে সেটা সাবমিট করে দিবেন এবং সফলভাবে সাবমিট হয়ে যাওয়ার পর অ্যাপ্লিকেশন আইডির একটা এসএমএস পাবেন।তাছাড়া ওয়েবসাইট থেকেও এপ্লিকেশন আইডি সংগ্রহ করা যাবে বলে সেটা নিজেদের সংগ্রহে রেখে দিন এবং আবেদন পত্র পিডিএফ ফাইল ডাউনলোড করুন। ডাউনলোড করা হয়ে গেলে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে এবং আবেদনপত্র নিয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের কাছে কিছু জমা দিবেন। তাহলে তাদের অফিস চালু থাকার ভিত্তিতে এটা যত দ্রুত সম্ভব আপনাদের তত দ্রুত প্রদান করবে। এক্ষেত্রে আবেদনকারীর বয়স যদি পাঁচ বছরের উর্ধ্বে হয়ে থাকে তাহলে আবেদন ফি প্রদান করতে হবে। জন্ম নিবন্ধন তৈরি করার ক্ষেত্রে কারো কোনো প্রশ্ন থেকে থাকলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানাবেন।

bdris.gov.bd